ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন

আমাদের মধ্যে যে বা যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে চান, তারা চাইলে অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে সবার আগে জেনে নিতে পারেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম কি? কিভাবে আপনি চাইলে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন, এই সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। এছাড়াও এই ড্রাইভিং লাইসেন্স করার কিছু প্রণালী রয়েছে, সেই সম্পর্কেও জেনে নেয়ার প্রয়োজন আছে।

তাহলে আর দেরি না করে এখনি কিভাবে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন। এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কিভাবে সংগ্রহ করবেন বা কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে, সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করতে চান, তাহলে যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলো।

১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৪। নির্ধারিত ফী (পেশাদার- ১৬৭৯/-টাকা ও অপেশাদার- ২৫৪২/-টাকা) বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
৫। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬। সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

আপনি যদি, ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে চান, তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার যোগ্যতা

একটি কার্যকরী ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য যে সমস্ত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে অর্থাৎ যে সমস্ত যোগ্যতার মধ্যে আপনাকে থাকতে হবে, সেগুলো নিচে মেনশন করা হলো।

  • ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্ত হলো লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স। এই মধ্যে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করতে পারবেন।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনকারীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণী পাশ।
  • অপেশাদার এর জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য বয়স ন্যূনতম ২১ বছর হতে হবে।
  • মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।

উপরে উল্লেখিত যোগ্যতাগুলো যদি আপনার সাথে মিলে যায়, তাহলে আপনি চাইলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করতে পারবেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন প্রণালী সম্পর্কে জেনে নিতে চান এবং কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয় সে সম্পর্কে জেনে নিতে চান? তাহলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

আপনি যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স করবেন, সেজন্য আপনাকে প্রথমত বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয় রয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে।

আপনি চাইলে জাস্ট কয়েকটি স্টেপ কল করার মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন, step-by-step কিভাবে আপনি কাজটি করবেন সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

স্টেপঃ-১ ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন

লাইসেন্স করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে নিম্নলিখিত লিংক ভিজিট করতে হবে এবং তারপর এখানে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড রিলেটেড যে সমস্ত ইনফরমেশন রয়েছে, সে সমস্ত ইনফরমেশন দেয়ার মাধ্যমে এবং একটি নাম্বার দেয়ার মাধ্যমে এই ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।

Register Now

 

উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করার পরে নির্দেশনা সহিত একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিন।

স্টেপঃ২- ড্রাইভিং লাইসেন্স ওয়েবসাইটে লগইন এবং প্রকারভেদ সিলেক্ট করা

দ্বিতীয় স্টেপ হবে আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ওয়েবসাইটে লগইন করে নিতে হবে।

লগইন করার জন্য আপনি একাউন্ট তৈরি করার সময় যে সমস্ত ইনফরমেসন দিয়েছেন, সেগুলো সহায়তা লগ-ইন করে নিন।

লগিন করার কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে নিম্নলিখিত স্ক্রীনশটএর মত একটি পেজ দেখতে পারবেন। এই পেইজটি থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন অপশনের উপরে ক্লিক করুন।

এবং তারপরে আপনি কি রকমের ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করতে চান, সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রকৃতি সিলেক্ট করে নিন।

যেমন, আমি শিক্ষানবিশ-ড্রাইভিং-লাইসেন্স তৈরি করতে চাই, তার জন্য এই অপশনটি উপরে ক্লিক করলাম।

অপশনটি উপরে ক্লিক করার পরে রিকোয়ারমেন্ট গুলো ভালোভাবে পড়েন এবং তারপরে ❝আমি সম্মত❞ নামের যে বাটন পাবেন, সেটি উপরে ক্লিক করুন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন

যখনই আপনি এই অপশনটির উপরে ক্লিক করে দিবেন, এই স্টেপটি শেষ করে, তৃতীয় স্টেপে চলে আসতে পারবেন।

স্টেপঃ৩- লাইসেন্সের ধরন, জাতীয় পরিচয়পত্র ইনফো, ডকুমেন্টস আপলোড

তৃতীয় অপশনে আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। সেগুলো হলো লাইসেন্স এর ধরন, জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ডকুমেন্ট আপলোড করে দিতে হবে।

লাইসেন্স এর ধরন হিসেবে আপনি পেশাদার লাইসেন্স করতে চান, নাকি অপেশাদার লাইসেন্স করতে চান? সেটি সিলেক্ট করে নিন।

এবং তারপর আপনার আইডি কার্ডের ইনফর্মেশন গুলো যথাযথভাবে দিয়ে দিন।

এবং এই পেজটিকে যখন আপনি একটু নিচের দিকে স্ক্রল করবেন, তখন এখান থেকে আপনি ডাক্তারি সনদপত্র আপলোড করার মত অপশন পাবেন।

অর্থাৎ আপনি যে শারীরিকভাবে ফিট রয়েছেন এবং মেন্টালি ফিট রয়েছেন, সেটির জন্য ডাক্তারি সনদের প্রয়োজন হবে।

ডাক্তারি সনদ এবং অন্যান্য যে সমস্ত ইনফরমেশন গুলো তারা আপনার কাছ থেকে চায়, সেগুলো এখানে আপলোড করে নিন।

এবং একদম সর্বশেষে ❝সংরক্ষনে করুন❞ নামের অপশন পাবেন, সেই অপশনটা উপরে ক্লিক করে দিন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন

স্টেপঃ৪- মোটরযানের শ্রেণী এবং ইনফরমেশনগুলো যাচাই

এবার আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপে চলে আসতে পারবেন।

সেই ধাপটি থেকে আপনি কি মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে চান কিংবা লাইট ব্যবহার করতে চান? সেটি সিলেক্ট করে নিবেন।

অর্থাৎ আপনার মোটরযানের প্রকৃতির সিলেক্ট করে নিন এবং তারপরে নিচে যে সমস্ত ডাউনলোড বাটন রয়েছে সে সমস্ত বাটন থেকে ইনফরমেশন গুলো ডাউনলোড করার মাধ্যমে, এগুলো কি সত্যি আপলোড হয়েছে সেটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন।

যখনই এই সমস্ত ধাপ যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করে নিবেন, তখন নিচের দিকে পেজটিকে স্ক্রল করলে ❝অনলাইনে ফি জমা❞ নামের একটি অপশন পাবেন।

সেই অপশনটির মধ্যে ক্লিক করুন।

স্টেপঃ৫- ইনফরমেশন এর সত্যতা যাচাই এবং ফি জমা দেয়া

এবার আপনাকে পুনরায় ইনফর্মেশন এর সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে এবং তারপরে অনলাইনের মাধ্যমে ফি জমা দেয়ার জন্য “ফি জমা দিন” নামের যে বাটন পাবেন সে বাটনের এর উপরে ক্লিক করুন।

 

স্টেপঃ৬- পেমেন্ট মেথড এর মাধ্যমে ফি জমা দিন

যখনই, ফি জমা দেওয়ার যে বাটন আছে, সেই বাটনের উপরে ক্লিক করে দিবেন, তখন আপনার সামনে অনেক গুলো পেমেন্ট মেথড ওপেন হয়ে যাবে।

এবারে সমস্ত পেমেন্ট মেথড এর মধ্যে থেকে আপনার পছন্দের যে কোন একটি পেমেন্ট মেথড এর উপরে ক্লিক করুন এবং সে পেমেন্ট মেথড এর মাধ্যমে নির্ধারিত পেমেন্ট পরিশোধ করে নিন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে নিন

পেমেন্ট পরিশোধ করে নেয়ার কাজ সম্পন্ন করে নেয়ার পরে, আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

স্টেপঃ৭- ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি ডাউনলোড

যখনই আপনি পেমেন্ট করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নেবেন, তখন আপনি অটোমেটিক ক্লিক করে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রিন্ট কপি ডাউনলোড করার অপশন চলে আসতে পারবেন।

এবার আপনি চাইলে এই প্রিন্ট কপি ল্যাপটপের মাধ্যমে মাউসের রাইট বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

কিংবা আপনার মোবাইল ফোন থেকে ছবিটির উপর চেপে ধরার মাধ্যমে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

এছাড়াও আপনি যখন আবার পুনরায় এই ওয়েবসাইটে লগইন করবেন তখন এই ওয়েবসাইটের একদম হোমপেইজে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইনফর্মেশন গুলো দেখতে পারবেন।

উপরে উল্লেখিত উপায়ে খুব সহজেই আপনি চাইলে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সফলভাবে তৈরি করতে পারবেন৷

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন প্রণালী এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে উপর আলোচনা করা হলো।

জেনে নিন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top