ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম – পাসপোর্ট ফি জমা

আমাদের মধ্যে যে বা যারা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম জেনে তা করেছেন, তারা নিশ্চয়ই ই পাসপোর্ট ফি আদায় করা নিয়ে বিভিন্ন রকমের সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন। ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না।

আপনি যদি ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।

এই আর্টিকেলের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ই পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবং ই পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সে সমস্ত তথ্য সম্পর্কে।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার জন্য কি কি লাগবে?

সাধারণভাবে, আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করে থাকেন, তাহলে এই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি জমা দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি জমা দেয়ার জন্য যে সমস্ত তথ্য সমুহের প্রয়োজন হবে, সেগুলো নিচে মেনশন করা হলো।

  • পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং মেয়াদ।
  • পাসপোর্টে ডেলিভারির ধরন সাধারণ বা জরুরী।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন এর নম্বর পাসপোর্ট।
  • আবেদন অনুসারে আপনার নাম।
  • পাসপোর্ট আবেদন অনুসারে আপনার ঠিকানা।
  • এবং পাসপোর্ট আবেদন করার সময় যে মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন সেই মোবাইল নাম্বার।

পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র আপনার সংগ্রহে থাকতে হবে এবং তারপরে পাসপোর্ট আবেদন করার চিন্তাভাবনা করতে হবে।

কিভাবে ই পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেয়া যাবে?

আপনি চাইলে ভিন্ন দুটি উপায়ে এই পাসপোর্ট এর টাকা জমা দিতে পারবেন।

এবং সেই দুই ধাপের মধ্যে থেকে একটি হলোঃ ম্যানুয়ালী বা সশরীরে নিকটস্থ ব্যাংকে গিয়ে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়া এবং অন্যটি হলো অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম জানার পরে ফি জমা দেয়া।

আপনার নিকটে যে সমস্ত ব্যাংক রয়েছে, সে সমস্ত ব্যাংকের মধ্যে থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি সহজেই ই পাসপোর্ট এর বিল জমা দিতে পারবেন।

এক্ষেত্রে, উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে এবং এই সমস্ত কাগজপত্র সাথে নিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি সাথে নিয়ে নিলে, এই সমস্ত ফি জমা দেয়ার মাধ্যমে পেমেন্ট স্লিপ করে নিতে পারবেন।

এই আর্টিকেলের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে অনলাইনে পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে, সেজন্য ম্যানুয়ালি কিভাবে টাকা জমা দিতে হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো না।

তবে ম্যানুয়ালি পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য আলোচনা করার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়না।

আপনি, শুধুমাত্র নিকটস্থ ব্যাংকে চলে যাবেন এবং কাগজপত্র দেখালে ই পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার কাজটি শুরু হয়ে যাবে।

তাহলে আর দেরি না করে এখন জেনে নেয়া যাক অনলাইনের মাধ্যমেই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

অনলাইনে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার নিয়ম

অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার জন্য আপনি চাইলে একটি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। এবং সেই ওয়েবসাইট ব্যবহার করার মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে পারেন।

এই কাজটি করার জন্য আপনাকে ভিন্ন কয়েকটি স্টেপ ফলো করতে হবে, যে সমস্ত স্টেফ ফলো করার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে মাধ্যমে সহজেই পেমেন্ট করে নিতে পারবেন।

স্টেপঃ১ লিংকে ভিজিট করা

এই কাজটি করার জন্য প্রথমত নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করতে হবে এবং তারপরে আমার দেখানো নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করার পরে নিম্নলিখিত স্ক্রীনশটএর মত একটি পেইজ দেখতে পারবেন।

এবার আপনি যেহেতু পাসপোর্ট ফি দিতে চান, সে জন্য পাসপোর্ট নামের অক্ষরের উপরে ক্লিক করুন।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম | পাসপোর্ট ফি জমা

পাসপোর্ট নামের অপশনের উপরে ক্লিক করার পরে এবার আপনার সামনে আরো অনেকগুলো অপশন ওপেন হয়ে যাবে।

এবার আবেদনের প্রকৃতি এবং বিতরনের প্রকৃতি সহ সমস্ত অপশনগুলো যথাযথভাবে ফিলাপ করে নিন।

এখান থেকে আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট আবেদনের প্রকৃতি, বিতরনের প্রকৃতি, টাকার পরিমাণ, মোট টাকার পরিমান সবকিছু লিখে দিতে পারবেন।

বুঝে-শুনে সমস্ত অপশন গুলো আপনার প্রয়োজন মত ফিলাপ করে নিন এবং তারপরে নিচে যে ওকে বাটন রয়েছে সেই “ওকে” বাটনে ক্লিক করুন।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম | পাসপোর্ট ফি জমা

যখনই আপনি ওকে বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিবেন, তখন আর একটি পেজে চলে যেতে পারবেন এবং সেই পেজটিতে আপনার নির্দিষ্ট পরিমান ফি দেখে নিতে পারবেন।

তারপরে আপনার পাসপোর্ট এর যে সনাক্তকরণ নাম্বার এবং আপনার পাসপোর্ট তৈরির আরো যে সমস্ত ইনফরমেশন রয়েছে, সে সমস্ত ইনফরমেশন গুলো যথাযথভাবে বসিয়ে দিন।

এবং একদম সর্বশেষে কোন ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে আপনি টাকা পরিশোধ করতে চান, সেই পেমেন্ট গেটওয় সিলেক্ট করে নিন এবং সেই ব্যাংকটি সিলেক্ট করে নিন।

একদম সর্বশেষে, মন্তব্য হিসেবে আপনি যদি কোন কিছু লিখতে চান, তাহলে লিখতে পারেন অথবা যদি কোন কিছু লিখতে না চান, তাহলে সেটি ফাঁকা রাখতে পারেন।

সমস্ত ইনফরমেশন যথাযথভাবে ফিলাপ করে নেয়ার পরে সেইভ নামের যে বাটন রয়েছে, সেই বাটনটি ক্লিক করে দিন।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম | পাসপোর্ট ফি জমা

সমস্ত ইনফরমেশন দিয়ে যখন আপনি ব্যাংক সিলেক্ট করে নিবেন তখন আপনার যে ইনফর্মেশন যদি সঠিক থেকে থাকে, তাহলে আপনি পেমেন্ট করার অপশনটিতে চলে যেতে পারবেন।

এবার পেমেন্ট গেটওয় সিলেক্ট করে নেয়া হয়ে গেলে যেভাবে আপনি পেমেন্ট করতে চান, সেভাবে পেমেন্ট করে নিন।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম | পাসপোর্ট ফি জমা

যখনই পেমেন্ট করার কাজ সম্পন্ন করে নিবেন, তখন আপনার যে পাসপোর্টের ফি পরিশোধের চালান ডাউনলোড করার প্রয়োজন রয়েছে, সেই ডাউনলোড করার প্রয়োজন মিটিয়ে নিতে পারবেন।

এছাড়াও কোন কারণে আপনি যদি চালান ভেরিফিকেশন করতে না পারেন, তাহলে অনলাইনে মাধ্যমে চালান ভেরিফিকেশন করে নিতে পারবেন এবং পুনরায় চালান ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

পুনরায় চালান ডাউনলোড করার নিয়ম

কোন কারণে পাসপোর্ট ফি পরিশোধের পর চালান ডাউনলোড করতে না পারলে আপনি চাইলে নিম্নলিখিত উপায় পুনরায় চালান ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

পুনরায় ডাউনলোড করে নেয়ার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

প্রথমত আপনি যে পেইজটিতে পূর্বে ছিলেন, সেই পেজটি বন্ধ না করে সেই পেইজের যে লিংক রয়েছে, সেই লিংকটি কপি করে নেন।

লিংক কপি করে নেয়া হয় গেলে নোটপ্যাড কিংবা যে কোন একটি নোট অ্যাপ এ লিংকটা পেস্ট করে নিন।

তাহলে লিংকের একদম সর্বশেষ অংশে 6373-37388282 এই টাইপের কয়েকটি সংখ্যা দেখতে পারবেন।

এরকম নাম্বার টাইপ এর যে সমস্ত সংখ্যা গুলো রয়েছে, সেগুলো আপনার চালান নম্বর।

এবং এই চালান নম্বর ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি সহজেই চালান এর প্রিন্ট কপি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

যখনই চালান নাম্বার কপি করে নেবেন, তখন নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করুন এবং তারপরে আপনার চালান নাম্বার দেয়ার পরে “Verify” অপশনটি উপরে ক্লিক করুন।

যদি আপনার দেয়া চালান নাম্বারটি সঠিক থেকে থাকে, তাহলে ভেরিফাই সম্পন্ন হয়ে যাবে এবং প্রিন্ট অপশনের উপরে ক্লিক করার মাধ্যমে আপনি চালান টি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম

উপরে উল্লেখিত উপায়ে আপনি চাইলে চালান নাম্বার সংগ্রহ করার পরে, পুনরায় আপনার অনলাইন চালান ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

যখনই আপনি চালান ডাউনলোড করে নিবেন, তখন এই কপি সংগ্রহে রেখে দিতে পারেন এবং তার পরে পাসপোর্ট অফিসে যখন থাকবে তখন এই কপি দেখানোর মাধ্যমে পেমেন্ট নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারেন।

কতটি ব্যাংক এর মাধ্যমে পেমেন্ট করা যাবে?

আপনি চাইলে অনলাইনে অফলাইনে বিভিন্ন রকমের ব্যাংক এর মাধ্যমে পেমেন্ট করে নিতে পারবেন। কি সেই সমস্ত ব্যাংক? সেগুলি নিচে দেয়া হল।

  • ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।
  • এবি ব্যাংক।
  • অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড।
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
  • ব্র্যাক ব্যাংক।
  • ইস্টার্ন ব্যাংক।
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
  • ইসলামী ব্যাংক।
  • মিডল্যান্ড ব্যাংক।
  • এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক।
  • ওয়ান ব্যাংক।
  • সোনালী ব্যাংক।
  • সাউথইস্ট ব্যাংক।
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক।

উপরে উল্লেখিত ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি চাইলে অনলাইনে কিংবা অফলাইনে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।

তাহলে আর দেরি না করে এখনি উপরে উল্লেখিত উপায় কাজে লাগিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দিয়ে দিন এবং পাসপোর্ট করার কাজটি আরও বেশি সহজতর করে তুলুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top